ফরজ ও নফল রোজার নিয়ত আরবি এবং বাংলা - ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় মুসলিম উম্মাহ ফরজ ও নফল রোজা নিয়ত এবং ইফতারের দোয়া সম্পর্কে লেখা আজকের ব্লগে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম জানাই। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হতে যাচ্ছে রমাদানুল মোবারক।

2025 সালের রমজান মাসে আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে অবশ্যই রোজা রাখবে।  কারণ রোজা রাখলে আল্লাহ তায়ালাকে সহজে সন্তুষ্ট করা যায়। আল্লাহ বলেছেন রোজায এমন এবাদত যার প্রতিদান একমাত্র আমি স্বয়ং নিজের হাতে দিব। 

আল্লাহ আমাদের সকল মুসলমানদেরকে রমজানের সকল রোজা এবং আমল করার এবার চলুন জেনে নেয়া যাক ফরজ ও নফল রোজার নিয়ত আরবি এবং বাংলা - ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ বিস্তারিত আলোচনা। 

ফরজ ও নফল রোজার নিয়ত আরবি এবং বাংলা - ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ

নিচের আর্টিকেলে আজকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এবং ভাগে ভাগে আরবি এবং বাংলা উচ্চারণ পাশাপাশি অর্থ তুলে ধরা হয়েছে।

ফরজ রোজার নিয়ত আরবি

প্রিয় মুসলিম উম্মাহ লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে আপনি যখন কোন এবাদতের নিয়ত আরবিতে করবেন, তখন অবশ্যই আরবির সঠিক উচ্চারণ আপনাকে পারতে হবে। না হলে অর্থ পরিবর্তন হওয়ার কারণে আপনার নিয়ত অ-সহিশুদ্ধ হতে পারে।

نَوَيْتُ أَنْ أَصُومَ غَدًا مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ فَرْضًا لِلَّهِ تَعَالَى

ফরজ রোজার নিয়ত বাংলায়

বাংলা উচ্চারণ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে আরবির সাথে যেন মিল থাকে বাংলার আরবি কখনো এক হয় না তাই যে কোন একজন হুজুরের কাছ থেকে অবশ্যই আরবির সঠিক উচ্চারণ  শিখে নেওয়া উত্তম।

"নাওয়াইতু আন আসুমা গাদান মিন শাহরি রমাদান ফারদান লিল্লাহি তা'আলা।

"আমি নিয়ত করলাম আগামীকাল রমজান মাসের ফরজ রোজা রাখার, সুবহে সাদিক থেকে মাগরিব পর্যন্ত, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।

নফল রোজার নিয়ত আরবি

আপনি কি সঠিক আরবি পড়তে জানেন? না হলে অবশ্যই আপনার জন্য উত্তম হবে বাংলায় নিয়ত করা । কারণ আরবি যখন আপনি সহি উচ্চারণ করতে না পারবেন । তখন এটি অর্থ পাল্টে নিয়ত  অ-সহিশুদ্ধ হয়ে যাবে । কাজেই আরবি নিয়ত না করে বাংলায় নিয়ত করা আমজনতা মুসলমানের জন্য ভালো।

نَوَيْتُ أَنْ أَصُومَ هَذَا الْيَوْمَ نَفْلًا لِلَّهِ تَعَالَى

নফল রোজার নিয়ত বাংলা উচ্চারণ

নাওয়াইতু আন আসুমা হাজা আল ইয়াওমা নাফলান লিল্লাহি তা'আলা।

বাংলা অর্থ:
"আমি নিয়ত করলাম আজকের দিন নফল রোজা রাখার, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য।

রমজান মাস ছাড়া রোজা রাখার নিয়ত

মনে রাখতে হবে রমজান ছাড়া যখন আমরা রোজা রাখি তখন হয়তো সেগুলো কাফফারা অথবা নফল রোজা তাই সেই রোজাগুলোর নিয়ত কিভাবে করবেন তার একটি নমুনা তুলে ধরা হলো এবং নফল রোজার নিয়ত তুলে ধরা হলো।

আরো পড়ুন : রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি  | মেয়েদের রোজা ভঙ্গের কারণ

কাজা রোজার নিয়ত (পূর্বের কোনো রোজা কাজা করতে চাইলে)

نَوَيْتُ أَنْ أَقْضِيَ هَذَا الْيَوْمَ عَنْ رَمَضَانَ فَرْضًا لِلَّهِ تَعَالَى

নাওয়াইতু আন আকদিয়া হাজা আল ইয়াওমা আন রমাদান ফারদান লিল্লাহি তা'আলা।

"আমি নিয়ত করলাম আজকের দিন রমজানের কাজা রোজা রাখার, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য।"
মানত রোজার নিয়ত (কোনো মানত পূরণের জন্য রোজা রাখলে)

نَوَيْتُ أَنْ أَصُومَ هَذَا الْيَوْمَ نَذْرًا لِلَّهِ تَعَالَى

"নাওয়াইতু আন আসুমা হাজা আল ইয়াওমা নাজরান লিল্লাহি তা'আলা।"

"আমি নিয়ত করলাম আজকের দিন মানতের রোজা রাখার, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য।

রোজার নিয়ত কখন করতে হয়?

সময়: রমজানের ফরজ রোজা বা কাজা রোজার নিয়ত সুবহে সাদিকের (ভোরের আজানের) আগে করতে হবে।

কারণ: ফরজ রোজার জন্য রাত থেকেই ইবাদতের মনোভাব থাকা আবশ্যক।

اللَّهُمَّ إِنِّي لَكَ صُمْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ، وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ

ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা ইন্নি লাকা সুমতু, ওয়া বিকা আমান্তু, ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু, ওয়া আলা রিজকিকা আফতোরতু।

ইফতারের দোয়ার বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোজা রেখেছি, তোমার উপর ঈমান এনেছি, তোমার উপর ভরসা করেছি এবং তোমারই দেওয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করেছি।

এই দোয়া ইফতারের সময় পড়া সুন্নত।

ইফতারের আগে দোয়া

ইফতারের আগে দোয়া পড়া সুন্নত, যা মহান আল্লাহর নিকট রোজার কবুলিয়াত এবং বরকত প্রার্থনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইফতারের আগে পড়ার উপযুক্ত দোয়া হলো:

اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ

আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু।

হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেওয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করছি।

এই দোয়াটি ইফতারের সময় মনের একাগ্রতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে পড়লে রোজার বরকত বৃদ্ধি পায়।

আরো পড়ুন : ২০২৫ সালের রোজার ঈদ কত তারিখে বাংলাদেশ

ইফতারের আগে দোয়া কবুল হাদিস

ইফতারের সময় দোয়া কবুল হওয়া নিয়ে হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। রোজাদারের ইফতারের মুহূর্তটি বিশেষভাবে বরকতময় এবং দোয়া কবুলের সময়।

হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:
"তিন ব্যক্তির দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না: রোজাদারের দোয়া ইফতারের সময়, ন্যায়বান শাসকের দোয়া এবং মজলুমের (অত্যাচারিতের) দোয়া।"
(সূত্র: তিরমিজি, হাদিস নং ২৫২৬)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:
"রোজাদারের জন্য ইফতারের সময় একটি দোয়া থাকে যা কখনো প্রত্যাখ্যান করা হয় না।"
(সূত্র: ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৭৫৩)

শেষ কথা

প্রিয় মুসলিম উম্মাহ আপনাদের সহযোগিতার জন্য আমরা সর্বোচ্চ তথ্য নির্ভর এবং বাছাইকৃত রমজানের বিভিন্ন আমল সম্পর্কে ইফতারের দোয়া ও রোজার নিয়ত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনারা এই আর্টিকেল থেকে অনেক উপস্থিত হতে পারবেন।

 আরো পড়ুন ; রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস

ভালো লাগলো সোশ্যাল মিডিয়ায় মুসলিম ভাই বোনদের মধ্যে শেয়ার করুন।