ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম

0
9
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম

ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানিনা, এই Blog এর মাধ্যমে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

ইসবগুলের ভুসির পরিচয়

ইসবগুলের ভুষির অনেক উপকারিতা হয়েছে, কিন্তু আপনি কি জানেন ইসবগুল কি বা ইসবগুলের পরিচয় কি? । ইসবগুল গুল জাতীয় একটি গাছ, ইসবগুলের ফুল ছোট হয়, পাপড়ি সূক্ষ্ম হয়, ইসবগুলের বীজের খোসা আছে, ইসবগুলের গাছের উচ্চতা দেড় ফুট বা দুই ফুট সাধারণত হয়ে থাকে। দুই কোষ বিশিষ্ট হাত থেকে ৮ মিলিমিটার লম্বা হয় এবং ফলের ভিতরে তিন মিলিমিটার লম্বা বীজ থাকে।

ইসবগুলের বীজ দেখতে নৌকার মতো এবং খোসায় পিস্তল জাতীয় পদার্থ থাকে। এটা এক ধরনের রবিশস্য । হেমন্তকালে এই বীজ বপন করা হয় । চৈত্র মাসের প্রথম থেকে শেষ অবধি ফসল তোলা হয়। ইসবগুল উপমহাদেশের সবাই মোটামুটি চেনে, কারণ এর নানাবিদ উপকারিতা সম্পর্কে সবাই আমরা জানি।

ইসবগুলের ভুসি in english

ইসবগুলের ভুসির ইংরেজি নাম কি? সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানতে চাই। বিদেশি বাজারে ইসবগুলের ভুসির নাম , সিলিয়াম হাস্ক , Psyllium husk , গ্রীক , সিলা, Psylla, এর কারণ হলো ইসবগুলের ভুষি দেখতে এক ধরনের মাছির মত ডানাহীন ফ্লি মাছি, ইসুবগুলের বিষ দেখতে আকারে অবয়বে অনেকটা ফ্লি মাছির মত বলেই ইংরেজিতে এই নামকরণ করা হয়।

ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম

ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে না জেনে ইসুবগুলের ভুষি খেলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। ইসবগুল অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির সঙ্গে খেতে হয়। এক গ্লাস পানিতে এক চামচ বসি মিশিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সর্বনিম্ন ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপরে পান করুন। এটি পানি বা শরবতের সঙ্গে ভালোভাবে নেড়ে ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে নিন ‌। মেশানোর সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে নিতে হবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম

এখন প্রায় অধিকাংশ মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগে থাকেন। এটি বর্তমানে একটি জটিল রোগের পরিণত হয়েছে। এমন কোন মানুষ পাওয়া কঠিন যার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা নেই। তবে ইসবগুলের ভুষি নিয়ম জেনে খেলে, কোষ্ঠকাঠিন্যের মত জটিল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

প্রথমে ১-২ চামচ ইসবগুল ২৪০ মিলিমিটার পানিতে মিশিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেতে হবে। ইসবগুল পায়খানার পানির পরিমাণ বৃদ্ধি করে পায়খানা নরম করে এবং সহজে বের হতে সাহায্য করে। এসব ভুল কতটুকু খেতে হবে তা বয়স ওজন শারীরিক অন্যান্য অসুস্থতার উপর নির্ভর করে।

ওজন কমাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমানোর জন্য দুই চামচ এসব গোল ২৪০ মিলিমিটার পানি ও এক থেকে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে হবে। ফলে বেশ খানিকক্ষণ প্যাড ধরা থাকে। ইসবগুল খাদ্যনালী পরিষ্কার করে ও শরীরের চর্বি কমায়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় এসব গোল সেবনের ফলে খুদা মান্দ্য ও ডায়রিয়া হতে পারে।

রাতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম

৫-১০ গ্রাম ইসবগুল একটা হালকা ঠান্ডা বা হালকা গরম পানিতে ৮ ঘন্টা ভিজিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিংবা সকালে খালি পেটে খেয়ে নিলে উপকার পাওয়া যায়। এতে করে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে।

বাচ্চাদের ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম

১-২ চামচ এসব গোল ২০০ ২৪০ মিলিমিটার পানিতে মিশিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেতে হবে। এতে করে শিশু দের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে সাবুদানা ইসুবগুলের ভুষি খাওয়াতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম

অনেকেই গর্ভাবস্থায়  ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাই। এখান থেকে আপনারা জেনে নিতে পারেন যে, হয়তো জানেন গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাটি বেশি দেখা দিতে পারে। এজন্য গর্ভাবস্থায় মহিলারা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার নিয়ম অনুযায়ী ইসুবগুলের ভুষি খেতে পারেন। এটি প্রাকৃতিকভাবে হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা  করে। গর্ভাবস্থায় মায়েদের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সবচেয়ে কার্যকরী উপাদান হলো ইসবগুলের ভুষি । এটা নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা নিরাময় করা যায় তবে গর্ভাবস্থায় সঠিক নিয়ম মেনে খেতে হবে।

গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ইসবগুলের ভুষি খাবেন। এজন্য দুই চা চামচ এসব গুলের ভুষি নিয়ে হালকা কুসুম গরম পানিতে মিশ্রণ করে কিছুক্ষণ পর খেয়ে নেবেন। এছাড়া চাইলে আর দুধের সাথে মিশিয়ে পরিমাণ মত খেতে পারে।

ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা

  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
  • পেট ব্যথা দূর করে
  • প্রসাবের জ্বালাপোড়া দূর করা
  • গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে
  • ডায়রিয়ার প্রতিরোধ করে
  • হার্ট ভালো রাখে
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
  • আরো জানুন:

এছাড়াও অনেকগুলো পুষ্টিগুণ রয়েছে ইসবগুলের ভুষিতে।

ইসবগুলের ভুসি অপকারিতা

সব জিনিসের যেমন উপকার রয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে তার ক্ষতির কিছু দিক রয়েছে। এবার জেনে নিন ইসবগুলের ভুসি অপকারিতা সম্পর্কে।

ইসবগুলের ভুসির অপকারিতা নাই বললেই চলে। সময় মতো এবং নিয়ম মেনে ইসবগুলের ভুষি খাওয়া যেতে পারে। তবে যাদের এলার্জির সমস্যা আছে ইসবগুলের ভুসি খেলে তাদের এলার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

এছাড়া অতিরক্ত মাত্রায় হিসাব গুলোর ভুসি খেলে ওজন অনেক কমে যেতে পারে। তাই যাদের শরীর স্বাস্থ্য মোটামুটি তারা পরিমিতভাবে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন।

এছাড়া অতিরিক্ত মাত্রায় ইসবগুলের ভুসি খেলে, পাকস্থলীতে টানটান ভাব হতে পারে। সঠিক নিয়মে ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন।

ইসবগুলের ভুসি খেলে কি মোটা হওয়া যায় ?

ইসবগুলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায়, তাই অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে, এছাড়াও চর্বি এবং ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকায় এটি স্থূলতা বৃদ্ধি হতে দেয় না। ইসবগুল খেলে শরীরের বাড়তি ভূরি বা মেদ কমে যায়। তাই কিছু ভুল খেলে মোটা হওয়ার কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এটি আপনার পেট ভালো রাখে শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে খাবারগুলো সঠিকভাবে হজম হয় এবং এটি আপনার মোটা হওয়ার জন্য কার্যকর হতে পারে।

প্রতিদিন ইসবগুল খেলে কি ক্ষতি হয় ?

সাধারণত ইসবগুল খাওয়ার কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে, শরীরের কোন ধরনের সমস্যা হয় না, ইসবগুল প্রতিদিন এক টেবিল চামচ করে তিনবার খাবার অভ্যাস করতে পারবেন, এটি পানির সঙ্গে গুলি খেলে বেশি উপকার পাবেন, আরো বেশি উপকার পেতে দুধের সঙ্গে গুলিয়ে খেতে পারেন। তবে অতিরক্ত মাত্রায় না খাওয়া ভালো।

ইসবগুলের ভুসি দাম ২০২৪ । ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম

বন্ধুগণ আমরা প্রায় সময় যেকোনো প্রোডাক্ট কিনতে গেলে দামের দিক থেকে প্রতারিত হই। সঠিক দাম না জানার কারণে দোকানদার অতিরিক্ত টাকা আমাদের কাছ থেকে দাম চায়। তাই চরণ জেনে নেই বর্তমান বাজারে ইসবগুলের ভুসির দাম কত ?

বর্তমান বাজারে ৫০০ গ্রাম  দাম ৯০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত এবং ২৫০ গ্রাম  ইসবগুলের ভুসির দাম ৪৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

ইসবগুলের ভুসি কিভাবে তৈরি হয় ?

ইসবগুলের ভুষির মূলত গাছ রয়েছে, গাছ থেকে বীজ ভেঙ্গে ভুসি তৈরি হয়। এটি একটি প্রাকৃতিক গাছ।  যার ইংলিশ নাম সিলিয়াম হাস্ক , Psyllium husk , গ্রীক , সিলা, Psylla, আশা করছি বুঝতে পারছেন।

উপসংহার: ইসবগুলের ভুসি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আপনারা এই ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম Blog থেকে অনেক উপকার পাবেন। ব্যক্তি জীবনে আমিও এ তথ্যগুলো সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসবগুলের ভুসি খাওয়া শুরু করেছি।

দৃষ্টি আকর্ষণ: প্রিয় ভিজিট, জীবনে চলার পথে কাজ চাকরি-বাকরির পাশাপাশি আমাদের শারীরিক সচেতন থাকা দরকার। সামনে রেখেই আপনাদের জন্য অনেক তথ্য বহুল আলোচনা আমাদের ওয়েবসাইটে পাবলিশ করা হয়।

অনুরোধ: আমাদের হেলদি ফুড এই ক্যাটাগরিতে অনেকগুলো ফল এবং খাবার সম্পর্কে সব বিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি এখানে প্রবেশ করলে আপনারা অনেক তথ্য জানতে পারবেন। পরিশেষে ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here